ইতিহাস পরিবর্তনের নোংরা খেলায় শিবির কেন মাতলো, প্রশ্ন ৯ দফার ঘোষক কাদেরের

 


ইতিহাস পরিবর্তনের নোংরা খেলায় শিবির কেন মাতলো- এমন প্রশ্ন তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ৯ দফার ঘোষক আব্দুল কাদের।

সময়ের আলোকে সেটাকে সুইটেবল মনে করি নাই। এভাবে সরাসরি ছাত্রদের পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি ওই সময়ে উঠা সমীচীন মনে হয়নি আমার কাছে। কিন্ত শিবির নিজেদের অবস্থানে অনড়। একইভাবে আমিও। পরবর্তী আলাপ আলোচনা শেষে পরিবর্তিত রূপ আসে। শিবির ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি দিয়েছিল, আমি শক্তভাবে অপোজ করেছি। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলে কাদের লাভ, সেটা তো আমি জানি। তারা এ দাবিতেও গোঁ ধরে ছিলেন। পরে আমার শক্ত অবস্থানের প্রেক্ষিতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি আসে। এই দুটাই তো মেইন। বাকি দাবিগুলা কমন দাবি ছিল সবার, অনলাইনেও মানুষজন লেখালেখি করেছিল এমন দাবি নিয়ে।


আগস্টের কিছুদিন পর ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক ভাই আমাকে গভীর রাতে অনেকবার ফোন দিলেন, দেখা করতেই হবে। ভোরের দিকে দেখা করলাম ভিসি চত্বরে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ হলো। একটাই কথা তার- তাদের সম্পর্কে আমি যেন কিছু লিখি। তারা ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও এক্সেস পাচ্ছেন না। আমি না লিখলে হবে না।


আমি লিখলাম, ইতিহাসের কাছে আমি দায়বদ্ধ থাকতে চাই না, কারো অবদানকে অস্বীকার করলে আমি ইহকাল এবং পরকালে দায়ী থাকবো। যেহেতু আমি অনেক কিছু জানি, অনেককিছুর অংশ ছিলাম, আল্লাহ সুযোগ করে দিয়েছেন। জাগতিক পাওয়া না পাওয়া ঊর্ধ্বে গিয়ে অনেকে ‘না’ করা সত্ত্বেও লিখলাম। আমার লেখার পর শিবিরের আলাপ সামনে আসে। শিবির বিভিন্ন জায়গায় দর কষাকষির সুযোগ পায়। কিন্তু বিনিময়ে শিবির কী করলো? আমাকে কখন কোথায় নাশতা খাওয়াইছে, কখন গেঞ্জি কিনে দিয়েছে- সেটা প্রচার করতে লাগলো। ৯ দফা নিয়ে তারা পুরা ইতিহাস-ই চেঞ্জ করে দিলো!


শেখ হাসিনার পতন না হলে আমি আব্দুল কাদেরের কল্লা যেতো, শিবিরের সাদিক-ফরহাদসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডার দাবিদারদের কিছুই হতো না। কারণ, তারা তো সবাই অদৃশ্য, আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বেরই হতো না, ইভেন ফেসবুকেও একটা অক্ষর লিখে নাই। বলী হলে আমি হতাম। হাসিনা ৩ জনকে পদ্মায় ডেকে নিয়ে ৮ দফা দিয়ে আন্দোলন নস্যাৎ করার ছক পুরোপুরি ফাইনাল করে ফেলছিল, সেই পরিস্থিতিতে ৯ দফা দিয়ে হাসিনার পুরো গেমপ্ল্যান ভেঙে দিলাম। আসিফ ভাই দুবার ডিবি হেফাজত থেকে ছাড়া পেয়েছেন, ছাড়া পাওয়া মাত্রই আমাকে ফোন দিয়েছেন, বারবার করে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন, সাবধানে থাকতে, আমাকে পেলেই মেরে ফেলবে।


জীবন বাজি রেখে সাত-পাঁচ না ভেবে আন্দোলনের ক্রুসিয়াল মোমেন্টে দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলাম, আর এখন এসব দেখা লাগতেছে!

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post